ক্রিকেটের বাইরে পাকিস্তানি খেলোয়াড় মোহাম্মদ রিজওয়ানের ধর্ম চর্চা নিয়ে বেশ সচেতন। মাঝে মাঝে খেলার ফাঁকে মাঠেই নামাজ পড়তে দেখা যায় তাকে। চলমান বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পাকিস্তানের ম্যাচেও এই ডানহাতি তারকা ব্যাটার মাঠে নামাজ আদায় করেছেন। তবে রিজওয়ানের এই কাণ্ডে তার বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ করেছেন জিন্দল নামের এক আইনজীবী।
এই আইনজীবী ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে রিজওয়ানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার অনুরোধও জানিয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজ এই অভিযোগের একটি ছবি প্রকাশ করেছে। যেখানে আইসিসির চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলেকে পাঠানো অভিযোগপত্রে জিন্দাল লিখেছেন, ‘এই অভিযোগ পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিরুদ্ধে, যিনি চলতি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তার দলের প্রথম ম্যাচে মাঠেই নামাজ পড়েছেন। মাঠে রিজওয়ানের নামাজ পড়াকে অনেক ভারতীয় নাগরিকের কাছে নিজের ধর্মকে ইচ্ছাকৃতভাবে তুলে ধরার প্রতীকী চিত্র বলেই মনে হয়েছে, যা খেলাধুলার চেতনাবিরোধী।’
এই আইনজীবী অভিযোগনামায় আরও লিখেছেন, ‘এ ধরনের কাজ খেলোয়াড়ের মধ্যে ম্যাচের চেতনাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। ম্যাচ খেলার সময় খেলোয়াড়ের মধ্যে যে আদর্শ কাজ করে, সেটাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। মোহাম্মদ রিজওয়ান ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ধর্মকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তিনি যে বার্তা দিতে চেয়েছেন, সেটি হলো, মুসলিম হিসেবে তিনি খেলাধুলার চেতনাও পেছনে ফেলেছেন। মাঠে রিজওয়ান নিজের ধর্মকে উপস্থাপন করেছেন এবং সংবাদ সম্মেলনে গাজার মানুষদের জয় উৎসর্গ করাটা তাঁর ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আদর্শের সত্যায়ন।
২০২১ সালে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে ভারতকে ১০ উইকেটে হারানোর পর মাঠে নামাজ পড়েছিলেন রিজওয়ান। সাবেক পাকিস্তানি বোলার ওয়াকার ইউনিস তখন বলেছিলেন, “রিজওয়ান যেটা করেছে, সেটা সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে। সে মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে হিন্দুদের সামনে নামাজ পড়েছে।” বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সামনে ৩১ বছর বয়সী রিজওয়ান নিজের ধর্মকে উপস্থাপন করার সুযোগ হিসেবে ক্রিকেট ম্যাচকে ব্যবহার করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যাচের মধ্যে মাঠে রিজওয়ানের নামাজ পড়ার প্রশংসাও করেছেন পাকিস্তানিরা।’-যোগ করেন জিন্দাল।
এর আগে শ্রীলংকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানকে জেতানোর পর গাজায় ইসরাইলের হামলায় নিহতদের জন্য সেঞ্চুরি উৎসর্গ করেছিলেন রিজওয়ান। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হলেও আইসিসি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে আইসিসিকে এ বিষয়ে রিজওয়ানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন বিনীত জিন্দাল।