সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনা কত অদ্ভত। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যদি বলা হত সেরা হওয়ার লড়াইয়ে থাকবেন আর্জেন্টিনার লাউতারো মার্টিনেজ ও কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ, অনেকেই বিষয়টা হেসেই উড়িয়ে দিত। তবে বর্তমানে এটাই হয়েছে বাস্তবতা। ফাইনালের আগে অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এই দুইজনের কারো হাতেই উঠছে টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কার।
এই যেমন লাউতারো মার্টিনেজ, ক্লাবে ভালো করলেও জাতীয় দলে ছিলেন তীব্র অফফর্মে। বিশ্বকাপ থেকেই গোল পাচ্ছিলেন না তিনি। এক পর্যায়ে মুল একাদশে জায়গা হারান, তবে তার উপর একদম আস্থা হারাননি কোচ স্কালোনি। ফলে বারবার সুযোগ পান জাতীয় দলে। সেখান থেকে লাউতারোকে নিয়ে তেমন প্রত্যাশাই করেনি আর্জেন্টিনা দল।
তবে কোপার মঞ্চে এসে যেন পুরোপুরি বদলে যান এল তোরো। টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচে দলের হয়ে জয় নিশ্চিত করেন। এরপরের ম্যাচে যখন ভাবা হচ্ছিল ড্র এর দিকে যাবে দল, তখন আবারো নাম তোলেন স্কোরশিটে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনা করে ২ গোল, দুটিই আসে লাউতারোর পা থেকে। সব মিলিয়ে এই আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা লাউতারো মার্টিনেজ। এই আসরে আর্জেন্টিনার সেরা খেলোয়াড় তিনি। আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে আনতে আছে বড় ভুমিকা।
প্রায় একই চিত্র হামেস রদ্রিগেজের জন্যও৷ এই তো রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর নিজের ক্যারিয়ারে ধুকছিলেন হামেস। এক সময় চলে যান কাতারের ক্লাবে। সেখানে মনে হচ্ছিল হামেস বুঝি ফুরিয়ে গেছেন। তবে এই বছর ব্রাজিলের লীগে এসে নিজের প্রাণ ফিরে পান হামেস রদ্রিগেজ। কোপা আমেরিকায় দেখান জাদুকরী নাম্বার টেনের ক্ষমতা।
এই আসরে মোট ৭ গোলে অবদান হামেস রদ্রিগেজের। গোল করেছেন মোট একটা, এসিস্ট মোট ৬ টি। ভেঙেছেন লিওনেল মেসির কোপার এক আসরে সর্বোচ্চ এসিস্টের রেকর্ড। ব্রাজিলের বিপক্ষে গোল না পেলেও সে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন হামেস রদ্রিগেজ, একাই ব্রাজিলকে ভুগিয়েছেন। এর বাইরে সেমির মঞ্চে একমাত্র গোলে করেছেন এসিস্ট। গোল ও এসিস্টের হ্যাট্রিক করেছেন কোয়ার্টার ফাইনালে। এমন এক ইনফর্ম খেলোয়াড় ফাইনালে যদি অঘটন কিছু না হয়, তাতে সেরা হওয়ার দৌড়ে থাকবেন সবার থেকে এগিয়ে।
এবার ফাইনালে নির্ধারণ হবে কে সেরা হবেন। এই দুইজনই নিজের যোগ্যতায় দলকে ফাইনালে এনেছেন, এবার তুলির শেষ আচড় দেওয়ার বাকি। এবার দেখা যাক সেই আচড়ে কে যান এগিয়ে, কে হন এই আসরের সেরা খেলোয়াড়। আর্জেন্টিনার লাউতারো মার্টিনেজ, নাকি কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ।