বর্তমান বিশ্বে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে ফ্যাঞ্চাইভিত্তিক টুর্নাম্যান্টে। কারন, এখানে অর্থের দিক থেকে হয়ে থাকে টাকার ছড়াছড়ি। আর এর মধ্যে সবদেশের সেরা ভারতের শীর্ষ টুর্নাম্যান্ট ইন্ডিয়া প্রিমিয়ার লীগ, আইপিএল। যেখানে খেলার জন্য প্রায় প্রতিটি খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে। কারন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অর্থ পাওয়া যায় এই লীগে সুযোগ পেলে। তাই অনেক নামি-দামি খেলোয়াড়রা জাতীয় দলের খেলা বাদ দিয়েও এই লীগ খেলতে আসেন। তবে, এখানে বরাবরই বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা এক প্রকার উপেক্ষিত থাকেন। তাদের উপর ভরসা করতে পারে খুব কম দলই। আর এর একটি প্রধান চিত্র দেখা যায় আইপিএলে এই পর্যন্ত মাত্র ৭ জন বাঙালি ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন এই চিত্রে। আর এবারই প্রথম দুই এর অধিক খেলোয়াড় এক আসরে সুযোগ পেয়েছেন।
আইপিএলে প্রথম বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে সুযোগ পেয়েছিলেন টাইগার দলের বর্তমান নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। যদিও,সেই আসরে ড্রাফটে মোহাম্মদ আশরাফুল ও মাশরাফি বিন মুর্তজারও নাম ছিলো। কিন্তু তাদের কে কেউ নেয় নি। আর রাজ্জাককে ৫০ হাজর ডলারের বিনিময়ে দলে নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার ব্যাঙ্গালুর। সেইবার তাদের অধিনায়ক ছিলেন রাহুল দ্রাবিদ। তবে এর পরের আসরেই ডাক পায় আশরাফুল ও মাশরাফি। আর সেই আসরেই দারুন লড়াই হয় মাশরাফিকে নিয়ে। ২০০৯ সালের প্লেয়ার ড্রাফটে প্রিতি জিন্দার পাঞ্জাব ও শাহরুখ খানের দল কলকাতা বেশ উঠে পরে লাগেন ম্যাশকে দলে নিতে। সেই আসরে দারুন লড়াইও হয় তাকে নিয়ে। শেষ পর্যন্ত ৬ লাখ ডলারের মাধ্যমে তাকে দলে নেয় কলকাতা। যা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৪ কোটি টাকা ছিলে। যা ওই আসরে কোনো প্লেয়ারের সর্বোচ্চ মূল্য। এমনকি এখন পর্যন্ত এটাই বাংলাদেশিদের সধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্য। কিন্তু মাঠের খেলায় মাশরাফি মাত্র এক ম্যাচে সুযোগ পায়। আর পার্ফমের দিক থেকে বল হাতে ছিলে অনেক খরুচে। অন্যদিকে একই আসরে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে সুযোগ পায় মোহাম্মদ আশরাফুল ৭৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে ।
এরপর ২০১০ সালে কোনো বাংলাদেশি সুযোগ পায়নি কোনো দলে। ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো সোয়া ৪ লাখ ডলারের বিনিময়ে কলকাতাতে নাম লেখান বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এরপরের আসরেও তিনি একই দলে খেলেন। আর সেই আসরে পুনে ওয়ারিয়র্সের হয়ে ডাক পায় ওপেনার তামিম ইকবাল। যদিও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ মিলেনি তার। তাকে নিয়েছিলো ৫০ হাজার ডলার ভিত্তি মূল্যে। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো আইপিএলে নাম লেখান কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। সেই আসরে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ তাকে নেয় ১ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে। এরপর, ২০১৮ সালে সাকিব ২ কোটি রুপির বিনিময়ে কলকাতা থেকে যায় হায়দ্রাবাদে। ২০২১ সালে তিনি আবারো ফিরেন কলকাতাতে ৩ কোটি ২০ লাখ রুপিতে। অন্যদিকে, ২০১৮ আসরে মোস্তাফিজ হায়দ্রাবাদ ছেড়ে ২ কোটি ২০ লাখ রুপিতে যায় মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে। আর ২০২১ সালে ১ কোটি রুপিতে আসেন রাজস্থানে। এরপরের আসরে খেলেন দিল্লির হয়ে। আর এবারও তিনি সেই দলের হয়েই খেলবেন, আর এবারের নিলামে প্রথম বারের মতো কলকাতায় নাম লেখিয়েছেন লিটন ।