আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করলেও পরে টানা পাঁচ ম্যাচ হেরে কার্যত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। সেমিফানালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল জয়ের ধারায় ফেরার শেষ সম্বল। কিন্তু সেই আশাও হতাশায় মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে ডাচরা।
এ অবস্থায় টাইগার দলকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এসব বিষয়ে কথা বললেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। যদিও বিশ্বকাপ দল ঘোষণার পর থেকেই সাংবাদিকদের ক্যামেরার লেন্সে খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির। কারণ, একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল তার নামটাও। অবশেষে সব নীরবতা ভেঙে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন পাপন।
রবিবার দুপুরে কলকাতার তাজ হোটেলে বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফ ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে জরুরি সভায় বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি পাপন। সভা থেকে বেরিয়ে পাপন মুখোমুখি হন গণমাধ্যমের। এ সময় দলের এমন পরাজয়ের পর কথা উঠবে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন বিষয়টি। তিনি জানিয়েছেন ক্রিকেটারদের এমন খারাপ সময়ে পাশে আছে বিসিবি।
পাপন বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে ওরা এখন অনেক সিরিয়াস। আমি ওদের বলেছি খারাপ সময়ে মানুষ খারাপ বলবে এটাই স্বাভাবিক। ভালো করলে তো মানুষ মাথায় নিয়ে নাচে। তবে আমরা খারাপ সময়ে ক্রিকেটারদের পাশে আছি।’
তিনি বলেন, ‘দল একটানা হারছে। এমন সময়ে কেউ ক্রিকেটারদের পাশে থাকবে না। তবে কেউ না থাকলেও আমরা তাদের পাশে আছি। সামনে তিনটা ম্যাচ ভালো করা ছাড়া উপায় নেই। এটা করতে গেলে দুটো জিনিস লাগবে। একটা হচ্ছে ওদের মধ্যে সাহস ও বিশ্বাসটা জাগিয়ে দিতে হবে, যে ওরা পারবে। সেটা নিজেদের মধ্যে না আসে তাহলে তারা দ্বিধাগ্রস্ত থাকবে। কাজেই সেটা করার চেষ্টা করেছি। তারা সকলে মিলে বলছে, তারা একতাবদ্ধ আছে। তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। ওরা জিততে পারছে না, এটা চিন্তা করে ওদের আরও বেশি খারাপ লাগছে। কারণ ওরাই তো সুপারস্টার আমাদের। ছিল সবসময়। ‘
পারফরম্যান্সের এমন অধারাবাহিকতার কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন সাকিবরা। এমনকি গতকাল ইডেনে নেদারল্যান্ডসের কাছে হারের পর সমর্থকরা ভুয়া, ভুয়া স্লোগানে বিদ্রুপ করেন তাদের। পাপন বলেন, ‘মানুষ বোর্ডকে বলবে, কোচিং স্টাফকে বলবে, প্লেয়ারদের বলবে। এটা স্বাভাবিক, এটা নিয়ে বলা উচিত না- এমন কিছু না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যেহেতু সিরিজ চলছে, টুর্নামেন্ট চলছে, আরও তিনটা ম্যাচ বাকি। আবার এই ম্যাচগুলোতে আহামরি কিছু করতে পারব সেটাও না। তবে আমরা সক্ষম। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এখনও সম্ভব। হারা জেতা বড় কথা না, ভালো ক্রিকেট খেলাটা আসল। আমাদের ব্যাটিং ভালো হচ্ছে না। ‘
আমি ওদের এটাই বলেছি, যে ঘুরে দাঁড়ানো উচিত। ওরা কি চায় বলুক, যখন যা চায় আমরা আছি। ওরা কথা দিয়েছে ওরা বসবে। এটাও বলেছে চাওয়ার কিছু নেই। আমি কথা বলে মনে হয়েছে ওরা এখন অনেক বেশি সিরিয়াস। এটা নিয়ে চিন্তা করছে কীভাবে আরও ভালো করা যায়। আশা করা ছাড়া উপায় নাই। আমি বলেছি। খারাপ সময়ে মানুষ অনেক কিছু বলবে। কারণ ভালো সময়ে মানুষ মাথায় নিয়ে নাচে। তাহলে খারাপ সময়ে বলবে না কেন। কিন্তু এই খারাপ সময়ে কেউ না থাকলেও আমরা আছি। ‘
ব্যর্থতার পরও দলের কম্বিনেশনে পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘এই খারাপ সময়ে ওদের পাশে আমরা আছি। কিসের জন্য আছি? সামনে ওরা যেন ভালো খেলে, সেজন্যে। এই বিশ্বাস ওদের উপরে আছে। আমাদের যে শক্তি সামর্থ্য আছে, এটা নিয়েই লড়তে হবে। আমরা কোনো পরিবর্তন আনতে পারব না। কোনো জায়গায় কোনো পরিবর্তন আনতে পারব না। কাজেই এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সামনের ম্যাচগুলো ভালো খেলুক এই প্রত্যাশায়।