ভারত-অস্ট্রেলিয়া দুই দলের বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল পরস্পরের মধ্যে লড়াই দিয়ে। শেষও হবে দুই দলের শিরোপা নির্ধারণী লড়াই দিয়ে। তবে ফাইনালে ওঠার পথ দুদলের একই রকম ছিল না। চলুন জেনে নেওয়া যাক, দুই পক্ষের শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে ওঠার পথ-পরিক্রমা
চেন্নাইতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই শিরোপা পুনরুদ্ধার অভিযান শুরু করে ভারত। দাপট দেখিয়ে স্বাগতিকরা প্রথম ম্যাচ জিতে নেয় ৬ উইকেটে। দিল্লিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দাপটের মাত্রা ছিল আরও বেশি। রোহিত শর্মার সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ম্যাচটি বগলদাবা করে স্বাগতিকরা।
তৃতীয় ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। দর্শকদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশায় জল ঢেলে লো-স্কোরিং ম্যাচটি একপেশে জিতে নেন বুমরাহ-সিরাজরা। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হয়নি রোহিত বাহিনীকে। কোহলির সেঞ্চুরিতে জয় পায় ৭ উইকেটে।
পঞ্চম ম্যাচে এসে নিউজিল্যান্ড চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ভারত। কিন্তু প্রথম সুযোগেই বীরত্ব দেখিয়ে দলকে টেনে নেন মোহাম্মদ শামি। লখনৌতে ১০০ রানে ইংলিশ পরীক্ষায় পাস করে রোহিত ও শামির মেধায়। আর ওয়াংখেড়েতে শ্রীলঙ্কাকে ৫৫ রানে অল-আউট করে, বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড গড়ে ভারত।
অষ্টম ম্যাচে কোহলি-জাদেজার যুগলবন্দীতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৪৩ রানে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ দেয় ভারত। আর গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আইয়ারের রেকর্ড জুটিতে নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানে হারিয়ে অপরাজেয় থাকে স্বাগতিকরা।
সেমিফাইনালেও শক্ত বাধার মুখে পড়তে হয়নি ভারতকে। আরেকবার কোহলি-শামির বীরত্বে নিউজিল্যান্ড বৈতরণী পার হয়ে ফাইনালে পা রাখে স্বাগতিকরা।
বিপরীতে ভারতের কাছে হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করা অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ম্যাচে আরও বড় ধাক্কা খায়। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১৩৪ রানে হারে অজিরা।
অবশ্য তৃতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় প্যাট কামিন্স বাহিনী। শ্রীলঙ্কাকে হারায় ৫ উইকেটে। পরের ম্যাচে হাই-স্কোরিং লড়াইতে পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারায় অস্ট্রেলিয়া।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩০৯ রানের জয়ে বিশ্বকাপ রেকর্ড গড়ে অজিরা। ট্রান্স-তাসমান লড়াইতে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। কিউইদের ৫ রানে হারিয়ে অপরাজিত ধারা বড়ায় রাখতে সক্ষম হয় অজিরা। পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৩৩ রানে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
অষ্টম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল অজিরা। কিন্তু গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মহাকাব্যিক ডাবল সেঞ্চুরিতে পূর্ণ পয়েন্ট ঝুলিতে পরে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও মিচেল মার্শ বীরত্বে ৮ উইকেটের বড় জয়ই তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
সেমিফাইনালে প্রোটিয়াদের অল্প রানে বেঁধে ফেললেও কঠিন প্রতিরোধের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত ইতিহাস পক্ষে পেয়ে ৩ উইকেটের জয়ে ফাইনালে পা রাখে অজিরা।