এশিয়া কাপের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে ভারতকে ৬ রানে হারিয়ে এবারের এশিয়া কাপ মিশন শেষ করলো বাংলাদেশ। টাইগারদের মুখোমুখি হওয়ার আগে এবারের এশিয়া কাপে একটি ম্যাচেও হারেনি ভারত।নিয়ম রক্ষার ম্যাচে এদিন কোহলি, বুমরাহকে ছাড়াই মাঠে নামে ভারত।বাংলাদেশও এদিন মাঠে নেমেছিলো একাধিক পরিবর্তন নিয়ে।
শুক্রবার কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। তানজিদ হাসান সাকিবের শিকার হয়ে ফেরেন রোহিত শর্মা ও তিলক ভার্মা।
পরে শুভমান গিলকে নিয়ে হাল ধরেন লোকেশ রাহুল। তবে হঠাৎই থেমে যান রাহুল। দলীয় ৭৪ রানে মাহেদীর বলে আউট হন তিনি। পরক্ষণেই ইনফর্ম ইশান কিষানকে ফিরিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
৯৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। এই পরিস্থিতিতে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন সূর্যকুমার যাদব। তবে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ২৬ রানে সাজঘরের পথ ধরেন হার্ডহিটার ব্যাটার।
একে একে ভারতীয় টপঅর্ডারররা সাজঘরে ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান ওপেনার শুভমান গিল। তাকে সঙ্গ দেন রবীন্দ্র জাদেজা। কিন্তু আচমকা থেমে যান তিনি। তবে গিল তাণ্ডব চলতেই থাকে। একের পর এক চার-ছক্কায় ক্যারিয়ারে চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
অবশ্য ৩ অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করার পর ইনিংস দীর্ঘায়িত করতে ব্যর্থ হন গিল। দলীয় ২০৯ রানে মাহেদীর শিকার বনেন ডানহাতি ব্যাটার। ইতোমধ্যে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ১২১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন প্রতিশ্রুতিশীল ওপেনার।
এতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু বাদ সাধেন অক্ষর প্যাটেল। শার্দুল ঠাকুরকে নিয়ে জোট বাঁধেন তিনি। ধীরে ধীরে এগিয়ে যান তারা। ফলে জয়ের স্বপ্ন দেখে ভারতও। এই অবস্থায় শার্দুলকে তুলে নিয়ে তা ফিকে করে দেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। সেই রেশ না কাটতেই প্যাটেলকে ফেরান তিনি।
তাতে আবার ম্যাচে ফিরে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। পরে তামিম ও লিটনের যৌথ প্রচেষ্টায় রানআউটে কাটা পড়েন মোহাম্মদ সিরাজ। ফলে জয়োল্লাসে মাতেন সাকিবরা। বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজ ৩ উইকেট এবং সাকিব ২ উইকেট লাভ করেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভারতের বোলারদের বিপক্ষে ব্যর্থ হন বাংলাদেশের টপ-অর্ডাররা। তৃতীয় ওভারে এসে প্রথম উইকেটের দেখা পায় ভারত। মোহাম্মদ শামির ইনসুইং বুঝতে ব্যর্থ হন লিটন দাস। শূন্য রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। পরের ওভারে আউট হন তানজিদ হাসান তামিম।
এদিন ব্যর্থ ছিলেন এনামুল হক বিজয়ও। দীর্ঘ সময় পর জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া এই ব্যাটার নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। শামির বলে পুল করতে গিয়ে আউট হন তিনি। দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর পাঁচে পাঠানো হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। তিনিও জ্বলে উঠতে পারেননি। ২৮ বলে ১৩ রান করে অক্ষর প্যাটেলের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন ইনফর্ম ব্যাটার।
৫৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তাওহীদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসান। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৫ বলে ৮০ রান করে আউট হন সাকিব। তারকা এই ক্রিকেটারের বিদায়ের মধ্য দিয়ে হৃদয়ের সঙ্গে ১০১ রানের জুটিটিও ভেঙে যায়। এরপর টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তাওহীদ।
৮১ বলে ৫৪ রান করে শামিকে তুলে মারতে গিয়ে তিলক ভার্মার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর ব্যাট হাতে চমক দেখান নাসুম আহমেদ। ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪৫ বলে ৪৪ রান করে আউট হন তিনি। মাহেদী হাসান ও অভিষিক্ত সাকিব জুটিতে যোগ করেন ২৭ রান। ২৩ বলে ২৯ রান করে মাহেদী এবং ৮ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ভারতের হয়ে শার্দুল ৩ এবং শামি ২ উইকেট লাভ করেন।