দলীয় সূত্রের খবর, ব্যাটিংয়ে আরও মনোযোগ বাড়াতে এন্টিগা টেস্টে কিপিং করতে চাচ্ছেন না তিনি। টেস্টে কিপিংয়ে লিটনের সাময়িক এই বিরতি চাওয়ার খবর ঢাকার বাতাসে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। লিটন তাঁর ইচ্ছার কথা জানালেও সিদ্ধান্ত নেবে টিম ম্যানেজমেন্ট। নুরুল হাসান সোহান থাকায় লিটনকে একটু ছাড় দিতেও পারেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
ইয়াসির রাব্বি চোটে পড়ায় সোহানের খেলার সম্ভাবনা বেড়েছে। টিম ম্যানেজমেন্টের পছন্দের তালিকার শীর্ষেই রয়েছেন তিনি। সোহান খেললে ফিল্ডিংটা উইকেটের পেছনেই করেন সাধারণত। এই কাজটা ভালোও পারেন তিনি। যে কারণে সোহানের নামের সঙ্গে দেশসেরা কিপারের তকমা লেগেছে অনেকদিন আগেই। সেদিক থেকে দেখলে সোহানকে উইকেটের পেছনে রেখে ফিল্ডার হিসেবে খেলতেই পারেন লিটন। কিপিং গ্লাভস ছাড়া খেলার অভ্যাস ভালোই আছে তাঁর, ওয়ানডেতেই এই ভূমিকায় থাকেন তিনি। ফিল্ডিংটা ভালোও করেন তিনি। কিপিং করতে না হলে ব্যাটিংয়ে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন লিটন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একজন জানান, টেস্টে ধারাবাহিক টপঅর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হওয়ায় প্রথম ১০ ওভারে ব্যাটিংয়ে নামতে হচ্ছে লিটনকে। নতুন বলেই ব্যাট করতে হয় তাঁকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা দুই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের দুই ইনিংসেই বলতে গেলে ওপেনারের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে মুশফিকুর রহিম ও লিটনকে। একশ ওভারের বেশি কিপিং করার পর বিশ্রাম ছাড়াই ব্যাটিং করতে নামতে হওয়ায় কিছুটা ক্লান্ত ছিলেন ২৭ বছর বয়সী এ ব্যাটার। সোহানের অন্তর্ভুক্তির সুযোগে গ্লাভস খুলে রাখতেই পারেন তিনি। এ ব্যাপারে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে জানতে চাওয়া হলে লন্ডন থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত কোচ এবং অধিনায়ক নেবেন। তাঁরা মনে করলে লিটনকে বিশ্রাম দিতেই পারে।’
গত এক বছর ধরেই টেস্টে ধারাবাহিক লিটন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও দিন দিন উন্নতির ছাপ রাখছেন। তিনি ব্যাটার হিসেবে খেললে সোহানেরও টেস্ট দলে নিয়মিত হওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা তৈরি হবে। লিটনের ব্যাটিং অর্ডারও ওপরের দিকে রাখতে পারবে টিম ম্যানেজমেন্ট। অধিনায়ক সাকিবের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। উইন্ডিজের বিপক্ষে টি২০ এবং ওয়ানডে সিরিজে কিপিংটাও করতে পারবেন সতেজ থেকে। মুশফিকুর রহিম ছুটি নেওয়ায় এই সফরের তিন সংস্করণেই কিপার ব্যাটার তিনি। এদিক থেকে বিবেচনা করলে উইন্ডিজ সফরে দুই টেস্টের সিরিজে কিপিং থেকে সাময়িক ছুটি পেতে পারেন তিনি। সোহানও তাতে স্বস্তি নিয়ে খেলতে পারবেন। তাঁর খেলা পাঁচ টেস্টের চারটিতেই ছিলেন উইকেটরক্ষকের ভূমিকায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে সুপার সাব হিসেবে এক ইনিংস খেলেন ব্যাটারের ভূমিকায়।
মজার ব্যাপার হলো, সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের উইন্ডিজ সফরেও দুই টেস্টের সিরিজে সোহানকে স্টাম্পের পেছনে রেখে লিটন ছিলেন ফিল্ডারের ভূমিকায়। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সিদ্ধান্তের ওপর।