স্পার্সদের মাঠে প্রথমার্থেই তিন গোল। দ্বিতীয়ার্থেও একের পর এক আক্রমণ। একটা সময় মনে হচ্ছিল বেশ হেসেখেলেই জিতবে আর্সেনাল। শেষ পর্যন্ত আর্সেনালের জয় এসেছে বটে, তবে সেটা আর হেসে খেলে হয়নি। স্পার্সরা শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত চাপে রেখেছে গানার্সদের, নিজেদের খেলোয়াড়দের ভুলে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত ছিল পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা।
শুরুর ভুলটা করেন ডেভিড রায়া। গ্যাব্রিয়েল মেঘালাসের সাধারণ এক ব্যাকপাস থেকে অনেক সময় পেয়েছিলেন বলটাকে ক্লিয়ার করার বা কাউকে দেওয়ার। তবে লং বল দিতে গিয়ে বল দিয়ে দিলেন সামনে থাকা ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোকে। সুযোগ পেয়ে ভুল করেননি রোমেরো, বল পাঠালেন জালে। এরপর ৮৬ মাঠে ডেক্লাইন রাইস ভুল করে বসলেন আবার। স্পার্সের প্লেয়ারকে অযাচিত চার্জ করেই দিলেন পেনাল্টি। সেখান থেকে গোল সনের, যা একপেশে ম্যাচটাকে বানিয়ে দেয় উত্তেজনা ঠাসা।
তবে সবাই ভুল করলেও ভুল করেননি একজন। তিনি আর্সেনালের সেন্টার ব্যাক গ্যাব্রিয়েল মেঘালাস। এদিন একের পর এক ক্লিয়ারেন্স, ট্যাকেল করেছেন। শেষ সময়ে যখন সন, কুলুভস্কি, রিচার্লিসনরা আক্রমণে আর্সেনালের ডিফেন্স নাভিশ্বাস করে ফেলেছেন, তখন একা হাতেই যেন সব সামলেছেন গ্যাব্রিয়েল। ক্রুশাল টাইমেও গ্যাব্রিয়েল বল পায়ে এত সাবলীল ছিলেন যে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেই দেন তারই স্বদেশী রিচার্লিসন, করে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও। অবশ্য তাতেও টলানো যায় গ্যাব্রিয়েলকে।
পুরো ম্যাচে ৯০ ভাগ হারে ৪০ টি সফল পাস, ৩ বার পাস দিয়েছেন ফাইনাল থার্ডে। একবার একুরেট লং বল দিয়েছেন, ৪ বার করেছেন ক্লিয়ারেন্স। মোট ৩ বার জিতেছেন ডুয়েলস। পুরো ম্যাচে মাত্র ফাউল করেছেন একবার। এই পরিসংখ্যানে গ্যাব্রিয়েলের অবদান ঠিকভাবে তুলে ধরা যাবেনা। তবে গোল এবং এসিস্ট পাওয়া এবং পুরো ম্যাচে দারুণ সব নৈপুণ্য দেখানো কাই হ্যাভার্টজকে রেখে যখন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ গ্যাব্রিয়েলকে দেওয়া হয়, সেখানেই যেন স্পষ্ট ম্যাচে গ্যাব্রিয়েলের প্রভাব।
এই সিজনে গ্যাব্রিয়েল এরকম পারফর্মেঞ্চ নিয়মিতই করছেন। গ্যাব্রিয়েল ও সালিবা জুটির কারণে এই সিজনে সবচেয়ে কম গোল হজম করা দল আর্সেনাল। পুরো সিজনে এই দলটা সেট পিচ থেকে কম গোল হজম করেছে, পেনাল্টি দিয়েছে মাত্র ১ টি, সেটিও শেষ ম্যাচে রাইসের অযাচিত ট্যাকেল। অর্থ্যাৎ ক্লিন ট্যাকেল এবং ক্লিয়ারেন্সে গ্যাব্রিয়েল যে দারুন দক্ষ, তা যেন আর্সেনালের এই মৌসুমের ফলেই স্পষ্ট।
জাতীয় দলে ইঞ্জুরিমুক্ত থাকলে তিনিই হবেন স্টার্টার। সেখানে তার থেকে বড় প্রত্যাশাই থাকবে সমর্থকদের। উড়ুগুয়ে, কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার মত হেভিওয়েটদের বিপক্ষে কোপায় মুখোমুখি হলে এই ডিফেন্সলাইনকে রাখতে হবে যে শক্ত। বড় দায়িত্ব তাই থাকবে গ্যাব্রিয়েলের কাছেই। ক্লাবের পারফর্মেঞ্চ ধরে রাখতে পারলে এ দায়িত্ব তার জন্য কঠিন হবারও কথা নয়।