অবশেষে তামিম ইকবাল ইস্যুতে মুখ খুললেন সাকিব আল হাসান। দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। যেখানে তামিমের দলে না থাকার সাথে তার কোনোরূপ সম্পৃক্ততা না থাকার কথা জানান তিনি।
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগে মির্ডল অর্ডারে তামিমকে ব্যাট করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এক বোর্ড কর্মকর্তা। যেটা তামিম মেনে নিতে পারেননি এবং তিনি বলেন বিশ্বকাপ দলে তাকে না রাখতে।
তবে তামিমের এমন মন্তব্যকে এবার ছেলেমানুষি বলেছেন সাকিব। টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘রোহিত শর্মার মতো প্লেয়ার ৭ নম্বর থেকে ওপেনিংয়ে এসে ১০ হাজার রান করে ফেলেছে। তো ও (তামিম) যদি দলের প্রয়োজনে মাঝে মাঝে ৩-৪ এ খেলে বা ব্যাটিংয়ে নামে তাহলে কি খুব প্রবলেম হয়? এটা আসলে আমার মনে হয় অনেকটা বাচ্চা মানুষের মতো, যে আমার ব্যাট আমিই খেলবো আর কেউ খেলতে পারবে না। টিমের প্রয়োজনে যেকেউ যেকোনো জায়গায় খেলতে রাজি থাকা উচিত। টিম ফার্স্ট।’
সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের আগে একাধিক সিরিজে বিশ্রামের কথা বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দলের বাইরে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপেও দলে ফেরানো হয়নি তাকে। যেহেতু সাকিবের নেতৃত্বে সেই আসরে খেলেছে বাংলাদেশ, তাই অনেকের ধারণা সাকিবের চাওয়াতেই দলের বাইরে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
তবে সাকিব এসব কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার অধিনায়কত্ব নেওয়ার ইচ্ছা ছিল না! আমি কখনও ভাবিও নাই কেউ ওই সময় অধিনায়ক ছেড়ে দিবে! তারপর আমাকে এশিয়া কাপের দল পাঠালো! আমি দেখলাম রিয়াদ ভাই দলে নেই! আমার কিছু বলারও ছিল না! কারন পরের দিন সবাই রওনা দিয়েছে! আমাকে সবাই বলতেছে আমি নাকি রিয়াদ ভাইকে নেইনি! এইসব হাস্যকর কথা!’
দলের ভেতরের কথা ভালোভাবে না জেনেই মানুষ যেভাবে সমালোচনা করে সেটাকে হাস্যকর বলেছেন সাকিব। বাংলাদেশ অধিনায়ক সমালোচকদের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের সাইলকোলজি এমন কেন! আমি কিছু জানি না! তাও আমার দোষ দেওয়া হয়েছে!’
নিজের অধিনায়কত্বের মেয়াদ নিয়েও কথা বলেন সাকিব। এই বিশ্বকাপের পর আর অধিনায়কত্ব করবেন না তিনি।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই বিশ্বকাপই শেষ। এরপর একদিনও (অধিনায়কত্ব) করবো না। যে কারণে আমি এশিয়া কাপের আগেও নিতে চাইনি। এরপরও এটা না। আমার কাছে মনে হয়েছে আমি হাসতে চাই, খেলতে চাই, পারফর্ম করতে চাই। এই একটা কারণে আমি করতে চাইনি।’
‘আর কোনে কারণ নেই। বেস্ট হয় যদি অধিনায়ক না থাকি। অধিনায়কত্ব কি আমার কোনো ভেল্যু এড করতেছে ক্যারিয়ারে এই স্টেজে এসে? আমি তো মনে করি না।’-আরও যোগ করেন সাকিব।
এর আগে হঠাৎ করেই নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন তামিম ইকবাল। সামনেই ছিল এশিয়া কাপ। ফলে সাকিব ছাড়া ভরসা করার মতো কেউই ছিল না দলে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমার অধিনায়কত্ব নেওয়ার ইচ্ছা ছিল না! আমি কখনও ভাবিও নাই কেউ ওই সময় অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিবে! তারপর আমাকে এশিয়া কাপের দলে পাঠালো! আমি দেখলাম রিয়াদ ভাই দলে নেই! আমার কিছু বলার ও ছিল না! কারন পরের দিনে সবাই রওনা দিয়েছে! আমাকে সবাই বলতেছে আমি নাকী রিয়াদ ভাইকে নেইনি! এইসব হাস্যকর কথা! মানুষের সাইলকোলজি এমন কেনও! আমি কিছু জানি না! তাও আমার দোষ দেওয়া হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে চলাকালীন দলের লজিস্টিক ম্যানেজার নাফিস ইকবালের চলে যাওয়াকে নাফিস এবং বিসিবি উভয়ের দিক থেকেই অপেশাদারিত্বের পরিচয় ফুটে উঠেছে বলে মনে করেন সাকিব।
সাক্ষাৎকারের একটা পর্যায়ে নিজের অবসরের ব্যাপারেও কথা বলেছেন মি.অলরাউন্ডার। ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি এবং ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়ানডে থেকে অবসরের চিন্তা করছেন তিনি। তবে দ্রুতই টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।
আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া ও পূর্ণ সমর্থন চেয়েছেন সাকিব।