দিন যায় মানুষের স্বভাব পাল্টায়। সময়ের সাথে সাথে মানুষ নাকি নিজেকে উন্নতি করাতে চায়। কারন, যতদিন যায় মানুষ বুঝতে শিখে , নিজের ভুল ত্রুটিগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম টেস্ট ফরম্যাটের দিক দিয়ে যেন ঠিক এর উল্টো। বছরের পর বছর, সিরিজের পর সিরিজ যাচ্ছে কিন্তু পাল্টাচ্ছে না তাতের খেলার ধরন । একের পর এক সিরিজ হেরেও, প্রেস ব্রিফিংয়ে খেলোয়াড়রা বলেন আমরা শিখছি! কিন্তু তাদের যেন শিখার শেষ নেই। ভারত, পাকিস্তান কিংবা মাত্র টেস্ট স্টেটাস পাওয়া দল আফগানিস্তান, সবার বিরুদ্ধে অবস্থা প্রায় একই। কখনো দেখতে পারেনি জয়ের মুখ। দেশের মাটিতেও হারতে হয় বড় ব্যবধানে।
অথচ, টেস্ট খেলছে প্রায় ২২ বছর হয়ে গেছে। তাহলে তাদের শিখার দিন শেষ হবে কবে? কিন্তু তার চেয়ে বড় প্রশ্ন টেস্টে সমস্যাটা কোন যায়গাতে? ব্যাটিংয়ে নাকি বোলিং ইউনিটে? পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট খেলার মর্যাদা পায় ২০০০ সালে। আর গত ২২ বছরে ম্যাচ খেলেছে ১৩৫ টি, যেখানে জয় পেয়েছে সর্বসাকুল্যে ১৬টি, আর ড্র করতে পেরেছে ১৮ টি ম্যাচে। আর বাকি ১০১ টি ম্যাচে হারতে হয়েছে প্রতিপক্ষের কাছে। অর্থাৎ, টেস্টে অবস্থা খুবই ভয়ানক বাংলাদেশের জন্য। আর এখানে দেখা যায় সর্বশেষ বেশির ভাগ ম্যাচেই টাইগার বোলাররা প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষকে ৪০০ রানের নিচে অল আউট করেছেন। কিন্তু টাইগারর ব্যাটাররা তাদের প্রথম ইনিংসকে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে মাত্র একবার ৩০০ রানের উপরে নিতে পেরেছেন। এছাড়াও, ভারতের বিরুদ্ধে এই ম্যাচের দিকে তাকালেও দেখা যাচ্ছে ভারত দুই ইনিংস মিলিয়ে ৬৬২ রান করেছে ১২ উইকেট হারিয়ে, আর বাংলাদেশের ব্যাটাররা মাত্র ৪৭৪ রান করেছেন ২০ উইকেটের বিনিময়ে।
অর্থাৎ, পরিষ্কার কতটা পিছিয়ে আছে ব্যাটাররা। তাছাড়াও, সিমিং কন্ডিশনে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দুর্বলতা একাধিকবার চোখে পরেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সেই সব মাটিতে ইবাদত, তাসকিনরা নিয়মিত ভালো করছেন বা ক্রমশ উন্নতি করছেন। এছাড়াও, এই বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাওয়া জয়ে, ব্যাটিংয়ের চেয়ে বোলারদের অবদান ছিলো বেশি চোখে লাগার মতো। দ্বিতীয় ইনিংসে ইবাদতের দারুন বোলিংয়ের কারনেই জয়টা মিলে। এমনকি দক্ষিন আফ্রিকার বিরুদ্ধেও এই বছরের টেস্ট সিরিজে পেসাররা অতীতের চেয়ে ভালো করেছে, কিন্তু ব্যাটাররা আগের মতোই রয়ে গেছেন।
তাই বলাই যায় ব্যাটারদের আরো বেশি পুক্ত হতে হবে এই ফরম্যাটে। কেননা, ব্যার্থতার দায় বরাবর আঙুল উঠে শান্ত, রাব্বি, মুমিনুলদের উপরই। তাই আধুনিক ক্রিকেটে আরো বেশি উন্নতি করতে হবে টাইগার ব্যাটারদের। তাহলেই, ভালো করা সম্ভব টেস্ট ক্রিকেটে।