ক্রিকেট বুঝি এমনই হয়। নানান নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডকে ৫ রানে হারাল অস্ট্রেলিয়া। কিউইরা জিততে পারলে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ায় জয়ের রেকর্ড হতো তাদের। প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া তাদের সামনে পাহাড় সমান ৩৮৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা বেধে ধেয়। রান তাড়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮৩ তে থামে কিউইদের ইনিংস।
শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। মিচেল স্টার্কের করা প্রথম বলে এক রান নিয়ে নিশামকে স্ট্রাইক এন্ডে দেন বোল্ট। পরের বলটা হয় ওয়াইড সহ চার। যাতে নিউজিল্যান্ডের কাজটি আরো সহজ হয়ে যায়। তখন ৫ বলে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। ২য়, ৩য় ও ৪র্থ বলে দুই রান করে নেন নিশাম। শেষ দুই বলে দরকার হয় ৭ রান। ৫ম বলেও দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয় নিশাম। ফলে শেষ বলে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার হয় ৬ রান। নতুন ব্যাটার লকি ফার্গুসেন তা করতে ব্যর্থ হন। এতেই ৫ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া পাহসড়সম লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার ভালোই শুরু করে। তবে দলীয় ৬১ ও ৭২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে কিউইরা। সেই চাপ সামাল দেন রাচিন রবীন্দ্র ও ডেইরি মিচেল। দুজনের ব্যাটে হয় ৯৬ রানের জোট। ব্যক্তিগত ৫৪ রানে আউট হন মিচেল। টম লাথাম, গ্লেন ফিলিপ্সরা ইনিংস বড় করতে পারেননি। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন রবীন্দ্র। আর তাকে সঙ্গ দেন জিমি নিশাম। ম্যাচের ৪১তম ওভারে রবীন্দ্র আউট হলে কিছুটা স্বস্তি পায় অস্ট্রেলিয়া। ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৯ বলে ১১৬ রান করেন রবীন্দ্র। শেষ দিকে টেইলেন্ডারদের নিয়ে লড়াই জমিয়ে তুলেন নিশাম। তবে শেষ ওভারে ১৯ রানের সমীকরণে শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
অজিদের পক্ষে অ্যাডাম জাম্পা সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে ধর্মশালায় টসে হেরে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার শুরু থেকেই কিউই বোলারদের ওপর তান্ডব চালান। আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া ডেভিড ওয়ার্নার এদিনও অল্পের জন্য শতরান মিস করেন। তবে ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা আরেক ওপেনার ট্রেভিস হেড তার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছে। দুই ওপেনার প্রথম পাওয়ার প্লেতে তোলে ১১৮ রান। যা বিশ্ব আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দুজনে গড়েন ১৭৫ রানের জুটি। ২০তম ওভারে হেড এবং ওয়ার্নারের মধ্যে জুটি ভেঙে যায়। এই ওভারের প্রথম বলেই ওয়ার্নারকে সাজঘরে ফেরান গ্লেন ফিলিপস। ৬৫ বলে ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৮১ রান করেন তিনি। হেড ৬৭ বলে ১০৯ রান করেন। তিনি মারেন ১০টি চার ও ৭টি ছক্কা। ২৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফিলিপসের বলে বোল্ড হন হেড। তিনি যখন প্যাভিলিয়নে ফেরেন, তখন অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ২০০/২।
হেড আউট হওয়ার পরই রানরেট কমতে থাকে অজিদের। মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা ধীরে-সুস্থে খেলতে থাকেন। তবে কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। স্টিভ স্মিথ (১৮), মিচেল মার্শ (৩৬), লাবুশেন (১৮) করে রান করেন।
তবে শেষের দিকে আবারো নিউজিল্যান্ডের ওপর চড়াও হন ব্যাটাররা। ৫ চার ও ২ ছয়ে ম্যাক্সওয়েল ২৪ বলে ৪১ ও জস ইংলিস ২৮ বলে ৩৮ রান করেন। আর কিউই বোলারদের আরও হতাশ করেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ২টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে তার ১৪ বলের ঝড়ো ৩৭ রানে শেষ পর্যন্ত ৪ বল বাকি থাকতে ৩৮৮ রানে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ফিলিপ ও বোল্ট উভয়ই তিনটি করে উইকেট লাভ করেন।