October 16, 2024
House #1, Road #17, Rupnagar Residential Area, Mirpur, Dhaka-1216
ক্রিকেট বাংলাদেশ

খেলা শেষে বউ ফোন দেয়নি- নাঈম হাসান

গত বছর অক্টোবরে বিয়ে করেন নাঈম। মাঝের এই সাত মাসে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। নাঈম এখন পর্যন্ত যেহেতু শুধু টেস্ট সংস্করণে খেলার সুযোগ পেয়েছেন তাই বলা যায়, বিয়ের পর বেকার বসেই ছিলেন।

কল দিয়েছিল কি না, সংবাদ সম্মেলনে সে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বিয়ের পর খেলতে নেমেই ৬ উইকেট…রহস্য কি?

নাঈম হাসান এর উত্তরে যা বলেছেন, তাতে অন্তত বিবাহিতরা দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে তাঁর সাফল্যের রহস্য ধরে ফেলতে পারেন!

গত বছর অক্টোবরে বিয়ে করেন নাঈম। মাঝের এই সাত মাসে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। নাঈম এখন পর্যন্ত যেহেতু শুধু টেস্ট সংস্করণে খেলার সুযোগ পেয়েছেন তাই বলা যায়, বিয়ের পর বেকার বসেই ছিলেন। বিয়ের পর জাতীয় দলের হয়ে প্রথম মাঠে নেমেছেন এই সিরিজেই।

কথা বলতে গিয়ে শুরুতে ক্রিকেটীয় জায়গায় থাকলেও শেষটায় উঠে এল বউ, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আসলে বিয়ের পর তো সিরিজ হয়েছে, ওগুলোয় ছিলাম না। এখন প্রথম ম্যাচ আল্লাহর রহমতে ভালো হয়েছে। বউ কল দেয় নাই।’

মাঠে খেলা চলাকালীন খেলোয়াড়দের ফোন ব্যবহারের অনুমতি নেই। দিনের খেলা শেষে ফোন পেতে পারেন। আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে জীবনসঙ্গী তাঁকে ফোন দেয়নি, নাঈমের এই কথার মধ্যে কেউ কেউ অনুযোগের গন্ধও পেতে পারেন।

বিয়ের পর প্রথম মাঠে নেমেই টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের সেরা বোলিং (৩০–৪–১০৫–৬), জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে একটা ফোন কল পেতেই পারতেন! সেটি না হলেও সংবাদ সম্মেলনে নাঈমের এমন উত্তরের অন্য এক কারণও খুঁজে নিতে পারেন রসিক ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিবাহিত পুরুষেরা সময়ে–অসময়ে, প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে বউয়ের কথা কেন বলেন?

কী আবার, ঘরে শান্তি বজায় রাখতে! না, তার মানে এই নয় যে নাঈমের ঘরে শান্তি নেই। তবু কাজটা করতে হয়। কেন? এই ধরুন, ক্যামেরার সামনে নাঈমের কথা শুনে তাঁর জীবনসঙ্গী হয়তো মুচকি হেসে ফোনটা হাতে তুলে নিয়েছেন।

২০১৮ সালে অভিষিক্ত নাঈম এই চার বছরে ক্যারিয়ারের আট নম্বর টেস্ট খেলছেন। বোঝাই যাচ্ছে দলে অনিয়মিত। মেহেদী হাসান মিরাজ চোটে না পড়লে এই সিরিজেও তাঁর খেলা হতো না। প্রস্তুতিটা নিয়ে রেখেছিলেন, ফলও পেলেন।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে ৬ উইকেট নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। এর আগে টেস্টে দুবার ইনিংসে ন্যূনতম ৫ উইকেট পেয়েছেন নাঈম।

এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেও আজকের পারফরম্যান্সকে এগিয়ে রাখছেন এই অফ স্পিনার, ‘আসলে এটা এগিয়ে বলতে হবে। সব পাঁচ উইকেটই তো অন্যরকম। বিশেষ করে এটা খুব ভালো উইকেটে পাঁচ উইকেট পেয়েছি, এজন্য একটু এগিয়ে রাখব।’

উইকেট বুঝে বল করার পুরস্কারটা পেয়েছেন নাঈম। বোঝা গেল তাঁর কথায়ই, ‘এই উইকেটে চিন্তা ছিল ভালো জায়গায় বোলিং করা। (বলে) বেশি ফ্লাইট (বাতাসে ঝুলিয়ে দেওয়া) দিলেও তো সমস্যা। আমি চেষ্টা করেছি ফ্লাইট দেওয়ার। গতকালকে একটু ফ্লাইট দিয়েছিলাম। আজকে লক্ষ্য ছিল ভালো জায়গায় জোরের ওপর বল করা।’
ব্যক্তিগত কোনো চিন্তা নিয়ে মাঠে নামেন না নাঈম। ভাবনাটা ছিল সহজ, একজন চোট পাওয়ায় ডাক পেয়েছেন, মাঠে নেমে নিজের পুরোটা নিংড়ে দেবেন। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে তাঁর একাই ৩০ ওভার বল করাটা সেই নিংড়ে দেওয়ারই প্রমাণ, ‘আমার চিন্তা ছিল যখন খেলছি, শতভাগ চেষ্টা করব, দিনশেষে ফল যাই আসুক যেন বলতে পারি শতভাগ চেষ্টা করেছি।’

দলে সুযোগ পাবেন কী না পাবেন, তা নিয়ে ভাবনা নেই নাঈমের। বুঝিয়ে দিলেন সেটি তাঁর দায়িত্ব নয়, ‘আসলে ওটা তো টিম ম্যানেজম্যান্টের ব্যাপার। সুযোগ পেলে খেলাটা আমার দায়িত্ব। এখন যদি আমার খেলায় চেষ্টা থাকে শতভাগ তাহলে টিম ম্যানেজম্যান্ট খেলাবে নাকি খেলাবে না, এটা তো উনাদের সিদ্ধান্ত।’

নাঈমের খেলায় আজ সেই চেষ্টার পুরোটাই অনূদিত হয়েছে। তাতে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে সমর্থকেরাও নিশ্চয়ই সন্তুষ্ট। কিন্তু নাঈম নিজে কী সন্তুষ্ট? তাঁর স্ত্রী যে একবারও ফোন দেননি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *