October 13, 2024
House #1, Road #17, Rupnagar Residential Area, Mirpur, Dhaka-1216
ফুটবল

ওনানার ভুলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলো অনিশ্চিত ম্যানইউর

এগিয়ে থেকেও গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানার ভুলে গালাতাসরের বিপক্ষে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৩-৩ গোলের সমতায় চ্যাম্পিয়ন লীগের শেষ ষোলো খেলা এখন প্রায় অনিশ্চিত রেড ডেভিলদের।

 

১১তম মিনিটে আলেহান্দ্রো গারনাচো যখন দারুণ এক কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ালেন, তখনই চুপ হয়ে গেল এতক্ষণ উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটতে থাকা আলী সামি ইয়েন স্টেডিয়ামের গ্যালারি। স্তব্ধ হয়ে যাওয়া সেই গ্যালারির সামনে গোল উদ্‌যাপন করতে গিয়ে দর্শকদের চুপ হয়ে থাকতে ইশারা করলেন গারনাচোও।

 

কিন্তু তুরস্কের গালাতাসারাই গ্যালারিকে শেষ পর্যন্ত চুপ করে রাখতে পারেনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। একবার ২-০, আরেকবার ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার পরও গোলকিপার আন্দ্রে ওনানার ভুলে শেষ পর্যন্ত ৩-৩ গোলের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইংলিশ ক্লাবটিকে।

 

৫ ম্যাচ খেলে ইউনাইটেডের পয়েন্ট ৪, গালাতাসারাইয়ের ৫। আগেই গ্রুপসেরা নিশ্চিত করে পরের পর্বে উঠে গেছে বায়ার্ন মিউনিখ।

 

দুইবার এগিয়ে থাকার পরও ইউনাইটেড জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে না পারার পেছনে ওনানার ভুলের দায় যেমন আছে, আছে হাকিম জিয়েশের দারুণ নৈপূণ্যও। চেলসি থেকে ধারে গালাতাসারাইয়ে আসা এই মরক্কোন উইঙ্গার জ্বলে ওঠার আগে ইউনাইটেড এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। ১১তম মিনিটে প্রথম গোলটি আসে গারনাচোর মাধ্যমে। এই গোলে যিনি সহায়তা করেন, সেই ব্রুনো ফার্নান্দেজ নিজে গোল দেন ১৮তম মিনিটে।

 

২০ মিনিটের মধ্যে দুই গোলে এগিয়ে যাওয়া ইউনাইটেডকে খুব বেশি সময় স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি গালাতাসারাই। ২৮ মিনিটে প্রায় পঁচিশ গজ দূর থেকে দারুণ বুদ্ধিমত্তার এক ফ্রি কিকে ইউনাইটেডের জালে বল জড়ান হাকিম জিয়েশ। ওনানা আরেকটু তৎপর থাকলে যা হয়তো রুখেও দিতে পারতেন। তবে গত কয়েক সপ্তাহে ছন্দে ফেরা এই ক্যামেরুনিয়ান গোলকিপার আসল ভুলটা করেন দ্বিতীয়ার্ধে, ৬২তম মিনিটে। তার আগে ৫৫তম মিনিটে ম্যাকটোমিনাইয়ের গোলে স্কোরলাইন ৩-১ বানিয়ে রেখেছে ইউনাইটেড।

 

ঘণ্টার কাঁটা পার হওয়ার কিছুক্ষণ পর অনেকটা প্রথমার্ধের মতো জায়গাতেই ফ্রি কিক পায় গালাতাসারাই। এবারও জিয়েশ নেন প্রায় একই শট। বল নাগালেই ছিল ওনানার। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে উল্টো নিজের জালেই পাঠিয়ে দেন তিনি।

 

ব্যবধান কমিয়ে আনার পর উজ্জ্বীবিত গালাতাসারাই আক্রমণে ধার বাড়ায়। আর সেই ধারাতে ৭১ মিনিটে নিয়ে আসে ৩-৩ সমতাও। ডান দিক থেকে জিয়েশের বাড়ানো বল দারুণ দক্ষতায় দ্রুত নাগালে নিয়েই ডান পায়ের জোরালো শটে বল জালে পাঠান আকতারকোগলু। এই গোলে ওনানার স্তম্ভিত হয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।

 

শেষ দিকে ইউনাইটেডও অবশ্য কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে। এর মধ্যে ৮৪তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। কিন্তু বল পোস্টে লেগে প্রতিহত হওয়ায় হতাশ হতে হয় তাঁর দলকে।

 

অপর ম্যাচে শেষ ষোলোয় উঠতে স্রেফ ড্র-টাই দরকার ছিল আর্সেনালের। আর ‘প্রতিশোধ’ নিতে দরকার ছিল এক গোল ব্যবধানে জয়, কারণ প্রথম লেগে লাঁসের মাঠ থেকে হার নিয়ে ফিরতে হয়েছিল।

 

কিন্তু আজ এমিরেটসে মিকেল আরতেতার দল যা করেছে, তা দরকার মেটানো এবং ‘প্রতিশোধ গ্রহণ’ তো বটেই, সঙ্গে আরও অনেক বড় কিছুও এনে দিয়েছে আর্সেনালকে।

 

চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ম্যাচের প্রথমার্ধেই গোল করেছেন আর্সেনালের পাঁচজন খেলোয়াড়। কোনো ইংলিশ ক্লাবের ম্যাচের প্রথমার্ধে ৫ গোলে এগিয়ে থাকার ঘটনাও এটিই প্রথম।

 

আর্সেনাল অবশ্য ৫ গোলেই থামেনি, দ্বিতীয়ার্ধে আরও এক গোল করে মাঠ ছেড়েছে ৬-০ ব্যবধানের জয়ে। এ জয়ে ৫ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের সেরা হিসেবে শেষ ষোলোয় জায়গা নিশ্চিত করেছে মিকেল আরতেতার দল। গ্রুপ রানার্সআপ হওয়ার লড়াইটা এখন পিএসভি (৮ পয়েন্ট) ও লাঁসের (৫ পয়েন্ট)।

 

এমিরেটসের ম্যাচটিতে আর্সেনালকে প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩তম মিনিট পর্যন্ত। গ্যাব্রিয়েল জেসুসের বাড়ানো বল গোলমুখের কাছে থেকে জালে জড়ান কাই হাভার্টজ। প্রথম গোলের পরের ১৩ মিনিটের মধ্যে আর্সেনাল পেয়ে যায় আরও তিন গোল। এর মধ্যে বুকায়ো সাকার সহায়তায় ২১তম মিনিটে জেসুস, ২৩ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেলির সহায়তা সাকা আর ২৭ মিনিটে তাকিহিরো তোমিয়াসুর সহায়তায় মার্তিনেলি গোল করেন।

 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তোমিয়াসুর দারুণ ক্রস থেকে বল নিয়ে আর্সেনালকে পঞ্চম গোল এনে দেন অধিনায়ক মার্টিন ওডেগার্ড। দ্বিতীয়ার্ধে ৮৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আর্সেনালের ষষ্ঠ গোলটি করেন জর্গিনহো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *